লালমনিরহাটে দলিল বিহীন ভূয়া মামলা ১২ বৎসর কাল যাবৎ পরিচালিত হওয়ায় মামলাটির প্রতি মিডিয়া নজরদারী দৃষ্টি রাখার জন্য সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের নামাটারীস্থ নিউ কলোনী হাফেজিয়া মাদ্রাসা রোডে হাকিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (বাচ্চু)র বাড়িতে মেসার্স হেকিমী ঔষধালয়ের হাকিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (বাচ্চু)র পরিবারের সদস্যবৃন্দের আয়োজনে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন মেসার্স হেকিমী ঔষধালয়ের হাকিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (বাচ্চু) প্রমুখ। এ সময় মেসার্স হেকিমী ঔষধালয়ের হাকিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (বাচ্চু)র ছোট ভাই মোঃ মঞ্জরুল আলম খোকনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মেসার্স হেকিমী ঔষধালয়ের হাকিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (বাচ্চু) লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম, আমি মোঃ আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, পিতাঃ মৃত হেকিম আব্দুল হক, সাং-হাফিজিয়া মাদ্রাসা রোড, নিউ কলোনী, নামাটারী, লালমনিরহাট। আমি অত্যন্ত বেদনাচিত্তে আপনাদের নিকট করজোড়ে আকুল মিনতী জানাইতেছি যে, দীর্ঘ ১২ বৎসর কাল অবধি লালমনিরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে চলমান মামলাগুলির নং-চির নিষেধাজ্ঞা জারিকৃত মামলা অন্য/৬২/১২ ও ডিক্রি রদ রহিত মামলা অন্য ১১২/১৩ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ার কারনে আমি অত্যন্ত হতাশা ও বেদনাচিত্তে আপনাদের স্বরনাপন্ন হইতে বাধ্য হইলাম।
প্রসঙ্গত ইতি পূর্বে গত ১৯ মে ২০১২ ইং সনে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা গং এর বিরুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দোকান ঘর ভাংচুর অবৈধভাবে দোকান ঘরের জায়গার জবর দখল ও প্রাণ নাশের হুমকির অভিযোগে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হইয়া ছিল। তাহা আপনারা অবগত আছেন।
দীর্ঘদিন পর আবারো আপনাদের ডেকে সাংবাদিক সম্মেলন করতে বাধ্য হচ্ছি এই মর্মে যে, লালমনিরহাট মধ্যস্থল শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ও রেলওয়ের ষ্টেশন এর নিকটবর্তীর ৩০৫১ দাগের ১৫৩ শতাংশ রেল ভূমি যাহা ১৯৪৭/৪৮ ইং সনে রেলওয়ের কর্মরত আনিছুজ্জামান স্পেশাল ল্যান্ড এ্যাকোয়ার অফিসার/রংপুর কর্তৃক লালমনিরহাটস্থ গোশালা লেনে রেলকর্মচারীগনের অধিগ্রহন বরাদ্দকৃত জায়গা যাহা পরবর্তীতে ২১ ও ২২ নং কোয়াটার হিসাবে পরিচিত ছিল।
আরো উল্লেখ্য যে, উক্ত জায়গার উপর একটি রেলওয়ে গোডাউন থাকার কারনে মালামাল সরবরাহ নিমিত্তে ১৯১৪ ইং সনে উক্ত জায়গার উপর রেল লাইন বসানো হইয়া ছিল।
যাহা যথোপযুক্ত প্রমান স্বরূপ ১৯৩১ ইং সনের মৌজা সাপটানা জে এল নং-২৪ সিট নং-০৩ রেভিনিউ সার্ভে নং-২১৫ এর মাঠ পর্যায়ে উক্ত ৩০৫১ দাগে প্রমাণ স্বরূপ রেলওয়ের রেল লাইন বসানোর অস্তিত্বর চিহ্ন সুস্পষ্ট রূপে পরিলক্ষিত হইতেছে এবং ৩০৫১ দাগের ১৫৩ শতাংশ জমি সহ আরো ৭১ শতক জমি অবৈধ ভাবে জোর জবর দখলে রেখেছেন। যাহ্য বর্তমানে বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ২,০০,০০,০০,০০০/-(দুই শত কোটি) টাকা।
ইত্য বসরে ভূমিদস্যু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা গং আকস্মিকভাবে জায়গা তাহাদের নিজ দখলে রাখিয়া অবৈধভাবে ব্যক্তিমালিকানা হিসেবে দাবি জানায় এবং তন্মেধ্য আমার নামিয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক লাইসেন্সকৃত দোকান ঘরটির জায়গার পরিমান ১৫ ফুট × ২৫ ফুট ৩৭৫ বর্গফুট অতপর উক্ত রেলওয়ের জায়গা জবরদখল করার পর আমার নামীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক লাইসেন্সকৃত জায়গাটিও নিজ দখলে লওয়ার জন্য পায়তারা করিতে থাকেন এবং লাইসেন্স খানা বাতিলের নিমিত্তে তৎকালিন দুর্নীতিবাজ রেলওয়ের স্বার্থবিরোধী কারি আব্দুল হাই ডি আর এম/লালমনিরহাট।
বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত জি, এম, পূর্ব অঞ্চল, চট্টগ্রাম এর সহিত আমার দোকান ঘরের রেলওয়ের বাণিজ্যিক লাইসেন্স খানা বাতিলের শলা পরামর্শ করিলে উহা গোপন সূত্রে আমি জানিতে পারিয়া যাহাতে আমার দোকান ঘরের জায়গা সহ মালামাল ও আসবাবপত্র রক্ষনাবেক্ষনের নিমিত্তে উক্ত রেলওয়ের জায়গার দোকান ঘরটি জবর দখল করিতে না পারে সেই জন্য আমি প্রাথমিক পর্যায়ে লালমনিরহাট সদর বেঙ্গল থানায় এক খানা অভিযোগ দায়ের করিলে থানা কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে আমি পরবর্তীতে অস্থায়ী চির নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য লালমনিরহাট সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা রুজু করি। যাহার নং অন্য ৬২/১২/ তারিখ ১৩/০৫/২০১২ ইং অতপর বিবাদী পক্ষ জরুরী ভিত্তিতে আদালত কর্তৃক প্রেরিত জরুরী তলব এই মর্মে প্রাপ্তি হন যে, উক্ত জায়গার আসবাবপত্র মালামাল সহ জায়গা জবর দখলের মনস্থ করিলে কেন তাহাদর বিরুদ্ধে ৫ টি কার্য দিবসের মধ্যে অস্থায়ী চির নিষেধাজ্ঞা জারী করা হইবে না। তাহার কারন দর্শানোর নোটিশ প্রেরিত হয়। অতপর নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা গং উক্ত কারন দশার্নোর নোটিশ প্রাপ্তির পর তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষিপ্ত হইয়া তৎকালীন দুর্নীতি বাজ আব্দুল হাই ডি. আর, এম, লালমনিরহাট বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত জি, এম পূর্ব অঞ্চল বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রামের সহিত যোগসাজসের মাধ্যমে আমার নামীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক লাইসেন্স খানা বাতিলের জন্য অপচেষ্টা চালাইয়া অবশেষে উহা বাতিল করেন।
ইহাতে স্পষ্ট রূপে প্রতীয়মান হয় যে, যাহা সম্পূর্নরূপে বে-আইনি যোগসাজসিক, তঞ্চকতমূলক, ক্ষমতার অপব্যবহার, বাংলাদেশ রেলওয়ের স্বার্থ বিরোধী এবং যাহা আমার ক্ষতি সাধনের মানসিকতায় করা হইয়াছে। যেহেতু আমাকে কোন প্রকার নোটিশের মাধ্যমে অবহিত না করিয়া এবং উক্ত জায়গা রেলওয়ের আওতাধীনে কি না তাহার কোন প্রকার তদন্ত না করিয়া আমার নামিয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক লাইসেন্স খানা বাতিল করা হয়। সেহেতু আমি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বাদী করিয়া রেলওয়ে বাণিজ্যিক লাইসেন্স খানা যাহাতে পূনঃ বহলা থাকে সেই নিমিত্তে লালমনিরহাট সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা রুজু করি যাহার নং-অন্য/৮৮/১২।
উক্ত মামলা চালু হওয়ার পর রেল কর্তৃপক্ষ রেলওয়ে এ্যাডভোকেট জনাব শামসুল হককে দ্বারা মামলাটি পরিচালনা করেন। অতঃ পর মামলা নং অন্য-৮৮/১২ এর যুক্তি তর্কে রেল কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করায় এবং আমার পক্ষের এ্যাডভোকেট উপযুক্ত প্রমান স্বরূপ জায়গা রেলওয়ের হুকুম দখলকৃত রেল ভূমি বলিয়া সংশ্লিষ্ট নথি পত্রাদির আলোকে পরিশেষে আমার অনুকূলে উক্ত বাণিজ্যিক লাইসেন্স খানা পূনঃ বহালের নিমিত্তে আদালত কর্তৃক আমার পক্ষে রায় ঘোষনা হয়। অতঃ পর তৎকালীন ডি আর এম আঃ হাই বর্তমানে অবসর আছেন।
এ বিষয়ে নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলার বক্তব্য জানা যায়নি।